স্বদেশ ডেস্ক: তৃতীয়বারের মতো বিপিএলের উপস্থাপক হিসেবে কাজ করছেন শ্রাবণ্য তৌহিদা। এবার তিনি বেসরকারি টিভি চ্যানেল জিটিভি’র প্রতিনিধি। রোজ মাঠ অথবা স্টুডিও থেকে তিনি প্রতিটি ম্যাচের চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন বিশেষজ্ঞ অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে। কাজটা একঘেঁয়ে লাগে কি না জানতে চাইলে শ্রাবণ্য বলেন, ‘একদমই না। বিষয়টা হচ্ছে ক্রিকেট আপনি কতটুকু উপভোগ করেন এবং বোঝেন। উপভোগ করেন না, আবার বোঝেনও কম, তাহলে তো এই বিশ্লেষণের কাজটি কঠিন হয়ে যাবে। আমি পুরো বিষয়টাকেই প্রচন্ড উপভোগ করি। একেবারে বল টু বল।’ তিনি আরও বলেন, ‘হ্যাঁ, এমন অনেকেই আসেন এখানে। এসেই ঝলক দেখান। এরপর কিছু ভুল করেন। নেতিবাচকভাবে ভাইরাল হন! এবং চলেও যান। এই সংখ্যাটাও কিন্তু কম নয়। যাদের বেশিরভাগই মনে করেন, এটা খুবই সহজ কাজ!’
কিন্তু এবার আগের মতো বিপিএল জমছে না! এর কারণ কী জানতে চাইলে শ্রাবণ্যর ভাষ্য, ‘আগের মতো এবার এখনো জমেনি। কারণ, ওভারসিস প্লেয়ারদের এবার আমরা তেমন পাইনি। মনে আছে, এর আগে প্রথম দিন থেকেই আমরা মাঠে পেয়েছি ডেভিড ওয়ার্নার, ক্রিস গেইল, এবি ডি ভিলিয়ার্স, স্টিভেন স্মিথদের মতো তারকা প্লেয়ারদের। যাদের আমরা এবার শুরু থেকে পাইনি। এর বাইরেও আমি মনে করি এবারের আসরের সবচেয়ে বড় মাইনাস পয়েন্ট সাকিব আল হাসান। এমন একজন প্লেয়ার নিষিদ্ধ, তার প্রভাব তো গ্যালারিতে পড়বেই। আরেকটা বিষয়, এ বছর কিন্তু দুটো বিপিএল হচ্ছে। এটাও মাথায় রাখতে হবে। ফ্রাঞ্চাইজি সিস্টেমেও পরিবর্তন এসেছে।’ শ্রাবণ্যর উপস্থাপনা ক্যারিয়ার মাত্র পাঁচ বছরের। এর মধ্যে তিনটি বিপিএল কাভার করেছেন। বিষয়টি কীভাবে দেখেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রাপ্তিটা সত্যিই বেশি। আমি সৌভাগ্যবান। মনে পড়ে আমার শুরুর কথা। এই তো সেদিন। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাস। চ্যানেল ২৪ এর লাইফ স্টাইল নিয়ে একটা শো করতাম আমরা তিন উপস্থাপক। এরমধ্যে লাইভ একটি বিভাগ ছিল। অনেকেই বলতেন তখন, লাইভ সম্প্রচারের সময় আমি বেশ কনফিডেন্ট থাকি। যেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এরপর ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ আসরের জন্য জিটিভি উপস্থাপক খুঁজছিল। গেলাম। টিকে গেলাম। সেই থেকে শুরু আমার ক্রিকেট লাইভ শো।’ খেলার প্রতি আগ্রহ কি উপস্থাপনা করতে এসেই? ‘একদম না। আমি নিজে তো খেলা দেখিই, পুরো পরিবারকেও দেখাই। ছোটবেলায় খেলা দেখতাম ভাইয়ার সঙ্গে। আমার হাজবেন্ডও খেলার পোকা। সে অ্যালার্ম দিয়ে ভোর রাতে উঠে লিগের খেলা দেখে। সঙ্গে আমাকেও টেনে তোলে। পুরো খেলা পাগল ফ্যামিলি’ বললেন শ্রাবণ্য। শ্রাবণ্য মডেল ও উপস্থাপিকা হিসেবে পরিচিত হলেও তিনি মূলত একজন চিকিৎসক। শোবিজের কাজ আর পেশা কীভাবে সামলান জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘চিকিৎসা পেশার জন্য নাটক-সিনেমা-বিজ্ঞাপন বহু কিছু ছেড়ে দিতে হয়। সর্বশেষ একটা উদাহরণ দিই। ‘মিশন এক্সট্রিম’ ছবিটির প্রস্তাব ফেরাতে হয়েছে আমাকে। নিশ্চয়ই জানেন, এটা অনেক বড় ক্যানভাসের একটি ছবি। প্রস্তাব পাওয়ার পর আমারও খুব ভালো লেগেছিল। কিন্তু সেটি করিনি। নাটক-সিনেমার শ্যুটিং মানেই টানা তিন দিন থেকে কয়েক মাস ঘরের বাইরে যাওয়া। আমি সেটা করতে প্রস্তুত নই।’
জীবনের লক্ষ্য তাহলে কী! শ্রাবণ্য বলেন, ‘আমি আসলে সেরা চিকিৎসকই হতে চাই। এটাই আমার মূল লক্ষ্য। পাশাপাশি খেলা যেহেতু ভালোবাসি, উপস্থাপনায় পাঁচ বছর কাটিয়ে দিলাম- সো এই কাজটা বাঁচিয়ে রাখতে চাই।’